চ্যাট জিপিটি কি ও কেন?
চ্যাট জিপিটি
বর্তমান বিশ্ব তথ্য প্রযুক্তির ধারাবাহিকতায় অনেকটা এগিয়ে। বিশ্বে এখন প্রযুক্তি নির্ভরশীল। প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে বিশ্ব তার সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
আর বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত প্রযুক্তি হচ্ছে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এমন একটি প্রযুক্তি যা বর্তমান বিশ্বজুড়ে সমস্ত অফিসিয়াল কাজ থেকে শুরু করে সব সেক্টরে বিরাজ করছে। বর্তমানে উন্নতশীল দেশসমূহে কর্মচারী সরাসরি নিয়োগ না দিয়ে যারা এই প্রযুক্তির সাথে জড়িত হয়ে কাজ করছে তাদেরকেই নিয়োগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। আর চ্যাট জিপিটি হলো আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর দ্বারা তৈরি করা একটি চ্যাট বট। যা বিশ্বে ব্যাপক ভাবে আলোচিত।
চ্যাট জিপিটি আসলে কি?
চ্যাট জিপিটি Open AI দ্বারা তৈরি একটি অত্যধুনিক ভাষা প্রক্রিয়াকরণ সার্চ টুল। এটি মানুষের ভাষা বুঝতে এবং মানুষের মতো টেক্সট তৈরি করতে এবং মানুষের তৈরি যেকোনো প্রশ্নের সহজ সমাধান ও গঠনমূলক উত্তর দিতে সক্ষম। এটি একটি প্রাক প্রশিক্ষিত ভাষা মডেল এটি GPT-3 (জেনারেটিভ প্রি-ট্রেনইনড ট্রান্সফরমার -3) মডেলের রুপ যা ভাষা বা কথোপকথন বুঝার কাজ করে। এটি টেক্সট ডেটার বৃহৎ সংকলনের উপর প্রশিক্ষিত। এটি বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই গল্প,কবিতা, আর্টিক্যাল, ইমেইল, প্রবন্ধ, ইউটিউব ভিডিও, কোডিং, স্ক্রিপ্ট ইত্যাদি তৈরি করতে পারবেন।
এটি মানুষের মতো অনুভূতি ও প্রকাশ করতে পারে।
এবং মানুষের মতোই যেকোনো সাজানো সহজ প্রশ্নের সহজ এবং গোছানো ভাবেই উত্তর দিতে পারে।
এছাড়াও চ্যাট জিপিটির আরো বেশ কয়েকটি ব্যবহার রয়েছে। যেমন
- অনুভূতি বিশ্লেষক : এটি মানুষের মতো যেকোনো বিষয়ের ইতিবাচক দিক নেতিবাচক দিক উভয় বিশ্লেষণ করতে পারে। এবং উক্ত বিষয়ের উপর মতামত প্রদান করতে পারে।
- কথোপকথন : এই চ্যাটবট টি মানুষের সাথে কথোপকথনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি মানুষের মতো দীর্ঘ সময় ধরে কথোপকথন চালিয়ে যেতে পারে।
- সংক্ষিপ্তকরণ: এটি যেকোনো বড় লেখাকে সংক্ষিপ্ত করে করে মূল তথ্যে রুপান্তর করতে পারে।
- টেক্সট তৈরি : যেকোনো নির্দেশনার উপর ভিত্তি করে এটি নির্ভুল এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা লিখিত ভাবে তৈরি করতে পারে৷
- প্রশ্ন-উত্তর : যেকোনো প্রদত্ত প্রশ্নের উপর এটি খুব সহজের উত্তর দিতে পারে।
- কোডিং : চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে কোড লিখার কাজ সহজ হয়েছে। এটি সফটওয়্যার ভিত্তিক কাজে বেশ উন্নতও সাধনে ভূমিকা রাখছে।
- ডেটা ভিজু্যয়ালাইজেশন : চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে একাডেমিক যেকোনো উপস্থিতির উপস্থাপনা তৈরি করতে গ্রাফ বা চার্ট তৈরি করতে পারে। এর মাধ্যমে গবেষকরা বিভিন্ন ডেটা তৈরির কাজ করে বিশ্লেষণ করতে পারে।
- অনুবাদ : এটি এক ভাষা থেকে অন্য ভাষাতে যেকোনো কিছু অনুবাদ করে রুপান্তর করতে পারে।
- বাগ রিপোটিং : চ্যাট জিপিটি র মাধ্যমে বাগ রিপোর্টিং করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে সফটওয়্যার এর যেকোনো সমস্যা দ্রুত শনাক্ত করে তা সমাধান করা যেতে পারে।
- প্রবন্ধ : চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে একাডেমিক যেকোনো বিষয়ে প্রবন্ধ তৈরি করে তা ব্যবহার করা যেতে পারে।
- পাঠ্য সংশোধন : চ্যাট জিপিটি দিয়ে যেকোনো কিছুর বানান ব্যকরণগত ভুল সহজে শনাক্ত করে তা সংশোধন করা যায়।
এই চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে যেমন অনেক কাজ দ্রুত এবং সহজে করা যায় তবে এই কাজের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে।
চ্যাট জিপিটির সুবিধা
চ্যাট জিপিটির বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। চ্যাট জিপিটি বর্তমান বিশ্বের খুব চাহিদা সম্পন্ন একটি প্রযুক্তি। যা প্রযুক্তি কে আরো শক্তিশালী এবং দ্রুত গতি সমপন্ন করেছে। চ্যাট জিপিটি এখন মানুষ বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করছে৷ মানুষের জন্য এটি সবচেয়ে সহজ দিক হলো এটি মানুষের ভাষা বুঝে তাই মানুষ যা জানতে চাই তা খুব সহজেই জানতে পারে। ইংরেজিতে কোনো কিছু বুঝতে না পারলে এটি খুব সহজেই তা অনুবাদ করে সহজ করে তুলছে। বর্তমানে এটি কোনো কোম্পানি ছাড়া সবাই বিনামূল্যে ব্যবহার করছে। এটি ব্যবহার করে মানুষের সময়,শক্তি এবং পরিশ্রম বেঁচে যাচ্ছে।
চ্যাট জিপিটির অসুবিধা
চ্যাট জিপিটির সুবিধার পাশাপাশি এর বেশ কিছু অসুবিধা লক্ষণীয়। এটি শতভাগ নির্ভুল নয় তাই যেকোনো তথ্যের উপর ভুল তথ্য ও দিতে পারে।তবে এটি সাজিয়ে গুছিয়ে প্রায় ইউনিক করেই তথ্য দিতে পারে কিন্তু পুরোপুরি সৃজনশীল ভাবে কোনো কন্টেন্ট এখনো তৈরি করতে পারেনা। এটি কে এখনো প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। অপরদিকে ধারণা করা হচ্ছে এটি মানুষের কাজ কমিয়ে দিবে যে কারণে কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে। এবং বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে।
চ্যাট জিপিটি কি যেকোনো ভাষা বুঝে?
চ্যাট জিপিটি সকল ভাষা বুঝে এবং সেই ভাষাতে উত্তর দিতে পারে। অনুবাদ ও করতে পারে। তবে পুরোপুরি নির্ভুল ভাবে সাজিয়ে অনেক সময় তথ্য দিতে পারেনা। গুগলের মতো করে অনুবাদ করতে পারে। তবে এটি যেহেতু এখনো আপডেট করছে আশা করা যায় খুব তাড়াতাড়ি এর সমস্যা সমাধান হবে। এবং বাংলা সহ সব ভাষাই খুব সাবলীলভাবে তথ্য দিতে পারবে।