শহীদ তিতুমীর ও বাঁশের কেল্লার ইতিহাস
তিতুমীরের ভাল নাম সৈয়দ মির নিসার আলী। তার বাবার নাম সৈয়দ হাসান আলী এবং মায়ের নাম আবেদা রুকাইয়া খাতুন। ১৭৮২ সালের ৭ই জানুয়ারী খৃষ্টাব্দ (১৪ মাঘ, ১১৮২ বঙ্গাব্দ), উত্তর ২৪ পরগনার (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ) অন্তর্গত বশিরহাট মহকুমার চাঁদপুর মতান্তরে বাদুরিয়ার হাইদারপুর গ্রামে তার জন্ম। কথিত আছে তাঁর পিতৃপুরুষ সৈয়দ শাহাদাত আলী হযরত আলী (রা.) এর বংশধর ছিলেন। সৈয়দ শাহাদাত আলী ছেলে আব্দুল্লাহকে নিয়া ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে আরব দেশ থেকে বাংলায় আগমন করেন। সৈয়দ আব্দুল্লাহকে দিল্লীর সম্রাট জাফরপুরের প্রধান কাজী নিয়োগ করেন। এবং তাকে মীর ইনসাফ খেতাব দেয়া হয়।
তিতুমীর নামটি নিয়ে একটি গল্প প্রচলিত আছে। ছেলেবেলায় একবার তিতুমীর অসুস্থ হলে ডাক্তার তাকে ভীষণ তেঁতো অসুধ খেতে দেন। শিশু তিতুমীর সেই তীব্র তেঁতো অসুধ হাসিমুখে সেবন করতেন। একারণে সবাই তাকে তেঁতো বলে ডাক্তে লাগল। সেখান থেকেই তাঁর নাম হয়ে গেল তিতুমীর।
পড়াশোনা ও প্রথম জীবনঃ
তিতুমীর ছেলেবালায় স্থানীয় একটি স্কুলে পড়াশোনা করেন ও তারপর মাদ্রাসায় ভর্তি হন। ১৮ বছর বয়সে তিনি কুরআনের হাফেয হন। এছাড়াও হাদীস ও ইসলামিক শরিয়া বিষয় পড়াশোনা করেন। আরবি, ফারসী ভাষায় তিনি দক্ষ ছিলেন। তিনি কুস্তি ও জিমন্যাস্টিঙ এ দক্ষতা অর্জন করেন। কিছুদিনের জন্য তিনি এক স্থানীয় জমিদারের দেহরক্ষীর কাজ করেন। কোন একটি লড়াই এর কারণে তাঁর জেল হয়। জেল থেকে বের হয়ে ১৮২২ সালে তিনি হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা যাত্রা করেন।
মক্কায়, তিতুমীর স্যার সৈয়দ আহমদ বেরেলভির দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন একজন ভারতীয় ইসলামী পুনরুজ্জীবনবাদী প্রচারক, যিনি সামাজিক রাজনৈতিক জীবন থেকে সমস্ত অনৈসলামিক দুর্নীতি দূর করতে এবং শরিয়া কার্যকর করার জন্য জিহাদের পক্ষে ছিলেন।
ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কারঃ
১৮২৭ সালে তিনি মক্কা থেকে ফিরে আসেন। তিনি স্থানীয়দের মাঝে ইসলামের মূল শিক্ষা বিস্তারের জন্য কাজ করে থাকেন। বিশেষ করে তৌহিদের শিক্ষা বিরোধী কবর পূজা, পীরপূজা ইত্যাদি শিরক ও বেদাতী প্রথা ও সুদ খাবার মত ইসলাম বিরোধী কদাচার ত্যাগ করে ইসলামের মৌলিক শিক্ষা অনুসরণের আদর্শ প্রচারে কাজ করতে থাকেন। অল্প সময়েই তিনি জনপ্রিয় নেতা হয়ে উঠেন। যদিও তাঁর অনুসারীদের বেশিরভাগ ছিল মুসলমান চাষী, কিন্তু দরিদ্র হিন্দুদের মাঝেও তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠছিলেন।
জমিদার ও নীলকরদের অত্যাচারঃ
হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়েই স্থানীয় দেশীয় জমিদার ও বৃটিশ নীলকরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। যুগ যুগ ধরে বাংলার কৃষকেরা ধান, গম সহ প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী নিজেরাই চাষ করত। কিন্তু, বৃটিশদের শাসন শুরু হলে তাঁরা কৃষকদের ধান, গমের পরিবর্তে আফিম ও নীল চাষে বাধ্য করত। তাই কৃষকদের ঘরে খাবার থাকত না। তাদের খাদ্যশস্য কিনে খেতে হত। কিন্তু, জমিদারের আবার উচ্চহারে কর আদায় করত। খাবার কিনতে গেলে তাদের কর দেয়ার টাকা থাকত না। কর দিতে না পারলে হিন্দু মুসলমান সবার উপর চলত অত্যাচার।
তাই তিতুমীরের ধর্মীয় ও সমাজ সংস্কার আন্দোলন ধীরে ধীরে জমিদার ও বৃটিশ নীলকরদের অত্যাচারের হাত থেকে দরিদ্র প্রজাদের মুক্ত করার আন্দোলনে রূপ নেয়।
জমিদার কৃষ্ণদেব রায়ের সাথে দ্বন্দ্বঃ
তাঁর অনুসারীরা দাঁড়ি রাখত ও মহিলারা বোরখা পরত। যা কিছু মুসলমানের মনঃপীড়ার কারণ হয়ে ওঠে। তাঁরা স্থানীয় জমিদার কৃষ্ণদেব রায়ের কাছে এ ব্যাপারে আপত্তি জানায়। ১৮৩০ সালের জুন মাসে সরফরাজপুরের তালুকদার কৃষ্ণদেব রায় মুসলমানদের দাঁড়ি রাখার উপর বার্ষিক হারে করারোপ করেন। তিতুমীর এই অন্যায় করের তীব্র প্রবাদ জানান। তিনি দাঁড়ির উপর আরোপিত কর দিতে মুসলমানদের নিষেধ করেন। জমিদার লোক পাঠিয়ে নারিকেল বাড়িয়ায় তিতুমীরের প্রতিষ্ঠিত মসজিদ ভেঙ্গে দেন। এর দ্বারা উৎসাহিত হয়ে আরও দুই জন জমিদার তারাগনিয়ার রামনারায়ণ নাগ চৌধুরী ও নাগরপুরের গুরু প্রসাদ চৌধুরীও নিজেদের প্রজাদের দাঁড়ি রাখার উপর একই রকম কর আরোপ করেন। যারা কর দিতে রাজী হত না তাদেরকে কারারূদ্ধ করা হত। তিতুমীর ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালান। তিনি ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর কাছে জমিদারের এই অন্যায় করের বিরূদ্ধে অভিযোগ করেন। কিন্তু, ব্যর্থ হয়ে তিনি নিজের মিলিশিয়া বাহিনী গড়ে তুলতে লাগলেন।
নিজস্ব প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠনঃ
স্থানীয় জমিদারের বিরুদ্ধে তাঁর এ প্রতিরোধ তীব্র রূপ নিতে থাকে। দরিদ্র হিন্দু প্রজারাও জমিদার এর অত্যাচারের বাইরে ছিল না। তাই তারাও তিতুমীরের দলে যোগ দিতে থাকে। তিনি নারিকেল বাড়িয়ায় তাঁর ঘাঁটি স্থাপন করেন তাঁর অনুসারীদের লাঠি চালনা ও মল্লযুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিতে থাকেন। এভাবে তিনি একটি মিলিশিয়া বাহিনী গড়ে তোলেন।
কোম্পানীর বিরূদ্ধে বিদ্রোহঃ
১৮৩০ সালের অক্টোবর মাসে তিনি কোম্পানীর মালিকানা অস্বীকার করেন ও স্থানীয় জমিদারদের কাছে নির্দেশনা পাঠান যে, এখন থেকে তিতুমীরের কাছে কর দিতে হবে। একই মাসে এই নির্দেশ অমান্য করার কারণে একজন মুসলমান জমিদারের বিরূদ্ধে অভিযান চালানো হয়।
কৃষ্ণদেব রায়ের বিরূদ্ধে অভিযানঃ
৩১ শে অক্টোবর জমিদার কৃষ্ণদেব নারায়নের বিরূদ্ধে অভিযানে নামে ৩০০ মিলিশিয়ার একটি বাহিনী। তাঁর প্রাসাদ ভেঙ্গে দেয়া হয়। স্থানীয় বাজারে সুদ ব্যাবসায়ীদের দোকান পাট জ্বালিয়ে দেয়া হয়। একটি মন্দিরের সামনে গরু কুরবানী করা হয়।
তিতুমীরের মিলিশিয়া বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে জমিদারের নীলকরদের সাথে জোট গড়ে তোলে। এই জোটের একজন প্রভাবশালী সদস্য হাবড়া-গোবরডাঙ্গার জমিদার কালীপ্রসন্ন মুখার্জীর বিরূদ্ধে অভিযান চালায় তিতুমীরের বাহিনী। কাছেই মোল্লাহাটি থেকে ইংরেজ ম্যানেজার ডেভিস ২০০ লোক নিয়ে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। কিন্তু তাঁরা পরাজিত হয়। ডেভিস অল্পের জন্য রক্ষা পায় এবং গোবরা-গোবিন্দপুরের জমিদার দেবনাথ রায়ের কাছে আশ্রয় নেয়।
দেবনাথ রায়ের সাথে লড়াইঃ
নদীয়ার লাউহাটিতে দেবনাথের বাহিনীর সাথে তিতুমীরের বাহিনীর লড়াই বাঁধে। লড়াইতে দেবনাথের বাহিনী হেরে যায় এবং সবশেষে ডেভিস নিহত হয়। কাছাকাছি কয়েকটি নীলকুঠি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয়।
নভেম্বর মাস জুড়ে এধরণের অভিযান চলতে থাকে। স্থানীয় পুলিশরা কৃষকদের প্রতিরোধ করতে পারছিল না। অনেক জমিদার কলকাতায় আশয় নেন। প্রসিডেন্সি বিভাগের কমিশনারকে পরিস্থিতি সামাল দিতে বলা হয়।
তিতুমীরের বিরুদ্ধে অ্যালেক্সান্ডারের ব্যর্থ অভিযানঃ
সেই অনুযায়ি বারাসাতের জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট অ্যালেক্সান্ডার ও বাদুরিয়া থানার অফিস ইনচার্জ রামরাম চক্রবর্তী ১২০ সদস্যের এক বাহিনী নিয়ে ১৮৩০ সালের ১৫ নভেম্বর তিতুমীরকে পরাস্থ করার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। কিন্তু, ৫০০ এর বেশি শক্তিশালী মিলিয়ার সাথে লড়াইয়ে তাঁর হেরে যায়। রামরাম আরও ১৪ জনের সাথে নিহত হন, যদিও অ্যালেক্সান্ডার কোন রকমে পালিয়ে বাঁচে।
তিতুমীর বাদশাহ হলেনঃ ১৮৩১ সালের মধ্যে, পরগণার বিশাল অংশে রাজনৈতিক শূন্যতা দেখা দেয়। তিতুমীর বৃটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং নিজ জেলা নদীয়া ও উত্তর চব্বিশ পরগণা ও ফরিদপুরকে নিজের শাসনাধীনে নিয়ে আসেন। তার অনুসারীদের মধ্যে হাজার হাজার হিন্দু ও মুসলিম কৃষক ছিলেন। তিনি নিজেকে বাদশা ঘোষণা করেন। তাঁর তাঁর ভাগ্নে গোলাম মাসুম খান তাঁর সেনাপতি ছিলেন, মুইজ আদ-দীন নামে একজন ওহাবী হলেন উজির।
বাঁশের কেল্লা নির্মাণঃ কোম্পানীর সাথে সরাসরি লড়াই অনিবার্য হয়ে অঠে। তিতুমীর বুঝতে পারেন লড়াই করতে হলে তাদেরকে আর ভাল মজবুত প্রতিরোধ তৈরি করতে হবে। তাই তিনি বাঁশ দিয়ে একটি দুর্গ নির্মাণ করেন। ইতিহাসে এটি তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা নামে পরিচিত।
আবারও ব্যর্থ ইংরেজ আক্রমণঃ ভারতের তৎকালীন গভর্ণর জেনারেল উইলিয়াম বেণ্টিঙ্কট এর নির্দেশ পেয়ে নদীয়ার জেলা প্রশাসক স্মিথ আর চারজন ম্যাজিস্ট্রেট সহ ৩০০ সদস্যের সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী নিয়ে ১৭ নভেম্বর, নারিকেল বাড়িয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। স্থানীয় জমিদারদের আরও কয়েকশো দেহরক্ষী তাদের সাথে যোগ দেয়। কিন্তু গোলাম মাসুম সেনাবাহিনীর অগ্রগতির খবর আগেই পেয়ে গিয়েছিলেন। তিনি নারিকেল বাড়িয়ার উত্তরপূর্বে বারাঘরে স্মিথের বাহিনীর মোকাবেলা করে হারিয়ে দেন। স্মিথের বাহিনী ইছামতি নদী পেরিয়ে একটি বাগানে আশয় নেয় ও লর্ড বেণ্টিঙ্কের কাছে আবেদন জানায় সেনাবাহিনীর সাহায্য নেয়ার জন্য।
ইংরেজদের সাথে শেষ লড়াইঃ ১৮৩১ এর ১৮ নভেম্বর, একটি অশ্বারোহী ইউনিট এবং পদাতিক ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত, ৩০০ সশস্ত্র সৈন্য এবং দুটি কামান নিয়ে মেজর স্কট, মেজর সাদারল্যাণ্ড ও লেফটেন্যান্ট শেক্সপিয়ার তিতুমীরের দুর্গ অবরোধ করে। পরদিন সকালে কামানের গোলার উপর্যুপরি আঘাতে কেল্লার পাতন ঘটে। ইংরেজদের আধুনিক অস্ত্র ও গোলা বারুদের কাছে তিতুমীরের বাহিনীর লাঠি ও বাঁশের কেল্লা টিকতে পারেনি। ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত তাঁরা লড়াই চালিয়ে যেতে পেরেছিল।
তিতুমীরের শাহাদাতঃ ৫০ জন অনুসারীর সাথে তিতুমীরকে বেয়োনেট চার্জ করে হত্যা করা হয়। গোলাম মাসুমকে কেল্লার সামনে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়। ৮০০ জনকে গ্রেফতার করে আলিপুর কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর মধ্যে ১৪০ জন বিভিন্ন মেয়াদে সাজা কাটে।
কমাণ্ডিং বৃটিশ অফিসার লণ্ডনে তিতুমীরের বীরত্বের উল্লেখ করেছিলেন। সেই সাথে দুর্গ নির্মাণের উপকরণ হিসেবে বাঁশের দৃঢ়টার কথা উল্লেখ করেছিলেন। কারণ বাঁশের কেল্লাটিতে আশ্চর্যজনক লম্বা সময় ধরে কামানের গোলা নিক্ষেপ করতে হয়েছিল।
বাঙ্গালী সমাজ, সাহিত্য ও জীবনে তিতুমীরের প্রভাবঃ ২০০৪ সালে, বিবিসির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির জরিপে তিতুমীর ১১ নম্বর শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী নির্বাচিত হন।
শেখ কামাল তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা নামে একটি নাটক পরিচালনা করেন যা ১৯৬৭ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (সে সময় পিটিভি ) প্রচারিত হয়। এই নামের একটি গ্রাফিক উপন্যাসও সেসময় পূর্ব পাকিস্তানে জনপ্রিয়তা পায়।
বিখ্যাত ঔপন্যাসিক মহাশ্বেতা দেবীও একটি উপন্যাসিকা লিখেছেন “তিতুমীর” নামে। এই উপন্যাসে তিতুমীরের সাহসিকতার বয়ান উল্লেখ করা হয়েছে নিখুতভাবে।
কলকাতার বিখ্যাত নাট্যকার, অভিনেতা ও পরিচালক উৎপল দত্ত ১৯৭৮ সালে তিতুমীর নামে একটি নাটক পরিচালনা করেন। এটি বাণিজ্যিকভাবে সফল একটি নাটক ছিল। এই নাটকে ঔপনিবেশিক ইতিহাসে তিতুমীরকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাঁর সমালোচনা করা হয়েছে।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে তিতুমীর ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে অনুপ্রেরণা। ১৯৭১ সালে ঢাকার জিন্নাহ কলেজের নাম পরিবর্তন করে সরকারী তিতুমীর কলেজ রাখা হয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান ঘাঁটির নাম রাখা হয়েছে ‘বিএনএস তিতুমীর’।
১৯৯২ সালে, তার ১৬১ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে, বাংলাদেশ সরকার তার সম্মানে একটি স্মারক ডাকটিকিট জারি করে।
হিন্দুবিদ্বেষী হিসেবে তিতুমীরকে দোষারোপঃ ইদানিংকালে উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদের উত্থানের পর হতে বেশ কিছু লেখায় তিতুমীরকে হিন্দু বিদ্বেষী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যা কিনা শুধুই একটি মিথ্যা অপবাদ।
তিতুমীর সম্পর্কে তথ্যগুলো আমরা মূলত পাই ইংরেজদের কাছ থেকে যারা তিতুমীরের বিরূদ্ধে লড়াই করেছিল। সেই তথ্যগুলো পক্ষপাত দুষ্ট, এবং জমিদারদের পক্ষ নিয়ে সেখানে তিতুমীরকে একজন সামান্য আইন অমান্যকারী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। পরবর্তীতে আব্দুল গাফফার সিদ্দীকী (১৮৭২-১৮৫৯) তাঁকে তুলনামূলকভাবে ইতিবাচক চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করেন।
উপসংহারঃ তিতুমীরের জিবনী নিয়ে আরও গভীরভাবে গবেষণা করা হলে, সেসময়ের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হলে তাঁর বিরূদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ দূর করা সম্ভব। সকল অভিযোগ আপত্তি সত্ত্বেও তিতুমীর বাঙালীদের জীবনে অনুপ্রেরণ হয়ে আছেন ও থাকবেন।