অনলাইনে ইনকাম করার ১০টি উপায়, কোন ধরনের ইনভেস্ট করা ছাড়াই
বর্তমানে আমাদের দেশে বেকারত্ব অভিশাপের মত, দেশে গ্রাজুয়েটের তুলনায় চাকরির সুযোগ অনেক কম হওয়ায় এই অভিশাপ বয়ে বেড়াতে হচ্ছে হাজার হাজার যুবককে। যদিও বা চাকরি পেয়ে যায় তাহলে যে বেতনে চাকরি করতে হচ্ছে সেই বেতনে নিজের বা নিজের পরিবারের সমস্ত ব্যয় বহন করা অনেকটা কষ্ট সাধ্য। বর্তমানে এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে চাইলেই কিছু কাজ দক্ষতা অর্জন করে সাম্বলবী হওয়া সম্ভব। এবং এই কাজগুলো শিখে ঘরে বসেই কাজ করে বর্তমানে সাম্বলবী হয়েছে হাজার হাজার যুবক। যে কাজ গুলো শিখে অনলাইনে কাজ করা যাবে, সেই রকম ১০ টি কাজ নিচে উল্লেখ্য করা হল।
১/ গ্রাফিক্স ডিজাইন
আপনি যদি একজন আর্ন্তজাতিক মানের গ্রাফিক্স ডিজাইনার হয়ে উঠতে পারেন তাহলে আপনাকে আর পিছনে ফিরে থাকাতে হবে না। গ্রাফিক্স ডিজাইনে আপনি যে কোন একটি কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে অনলাইনই আপনি যেকোন ফুল টাইম কাজ যোগদান করতে পারেন। গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে অনেক ধরনের কাজের মধ্যে এইগুলো উল্লেখ্যযোগ্য, যেমন: টি-শার্ট ডিজাইন, লোগো ডিজাইন, ওয়েব সাইট ডিজাইন । আপনার এই যদি এই সব কাজে দক্ষতা থাকে তাহলে ফাইবার আপওয়ার্ক যেকোন মার্কেট প্লেসেই কাজ করে নিজের ক্যারিয়ার গঠন করতে পারেন ।
২/ ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার
ওয়ার্ডপ্রেস হল জনপ্রিয় কন্টেন্ট ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেম । ওয়ার্ডপ্রেসে প্রথম বল্গিং এর জন্য তৈরি করা হলেও পরে এইটি ব্যবহার সার্বজনীন হয়ে উঠে। বর্তমান সমস্ত ওয়েব সাইটের ৪০% ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি । তাই আপনি যদি বেসিক লেভেল ও ওয়ার্ডপ্রেসে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে মার্কেটপ্লেস গুলোতে কাজের অভাব হবে না ।
৩/ আর্টিকেল রাইটিং
আপনি যদি ইংরেজীতে দক্ষ হয়ে থাকেন, এবং অনলাইনে রাইটিং এর বেসিক শিখে নিতে পারেন, তাহলে আপনি সহজেই অনলাইন থেকে আর্টিকেল লিখে ইনকাম করতে পারবেন । বর্তমানে অনলাইনে দক্ষ আর্টিকেল রাইটার চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তাছাড়া আপনি প্রচলিত মার্কেটপ্লেসের বাহিরেও ক্লাইন্ট খুজে পেতে এতো বেগ পেতে হয় না। তবে অবশ্যই অবশ্যই আপনাকে ইংরেজী রাইটিংর ক্ষেত্রে দক্ষতা থাকতে হবে ।
৪/ ভিডিও এডিটর
বর্তমানে ভিডিও কন্টেন্টের যুগ, বড় বড় কোম্পানি গুলো তাদের মার্কেটিং এর জন্য এবং বড় বড় জনপ্রিয় ইউটিউবার সবাই কমবেশি ভিডিও এডিটরদের জব দিয়ে থাকে, কেউ বা ভিডিওর প্রজেক্ট অনুযায়ী ভিডিও এডিটরদের হায়ার করে থাকে। তাতে আপনি যদি একজন দক্ষ ভিডিও এডিটর হতে পারেন, তাহলে আপনার কাজের কোন অভাব হবে না ।
৫/ ভিডি কন্টেন্ট ক্রিয়েটর
বর্তমানে স্মার্টফোন৫ সবার হাতে হাতে, আপনি চাইলে আপনার পছন্দনীয় কোন একটা টপিকে আপনার স্মার্ট ফোন দিয়ে বিভিন্ন ভিডিও তৈরি করে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারেন ।এবং ফেইসবুকে দিতে পারেন । ভিডিও ব্লগিং করতে পারেন । প্রথমে হয়ত আপনার ভিডিও খুব বেশি কেউ দেখবে না, কিন্তু একবার ফলোয়ার পেতে শুরু করলে আর পিছনে ফিরে থাকতে হবে না।
৬/ সোস্যাল মিডিয়া ম্যানাজার
আপনার যদি ফেইসবুক, টুইটার যা এখন এক্স এইসব সোস্যাল মিডিয়া ম্যানেজ করার বেসিক দক্ষতা থাকে এবং টুকটাক লিখালিখি এবং ক্যানভা দিয়ে টুকটাক ব্যানার তৈরি করতে পারেন, আপনি যে কোন মার্কেটপ্লেসেই এইসব বিষয় কাজ পেতে পারেন।
৭/ ব্লগিং
আপনার যদি লিখালেখির অভ্যাস থাকে এবং এমন কোন বিষয় আছে যার প্রতি আপনি খুবই প্যাশনেট, তাহলে সেই বিষয়ে লেখালেখি করেই আপনি চাইলেই ব্লগস্পটে একটা ব্লগ খুলে ফেলতে পারেন। সেখানে কন্টিনিউ লিখতে থাকেন । এবং বিভিন্ন সোস্যল মিডিয়ায় এইলেখা শেয়ার করতে থাকুন । যখন ভাল ভিজিটর পেতে থাকবেন, তখন আপনার বল্গ গুগুল এডসেন্স দিয়ে মনিটাইজ করতে পারবেন । এবং এইখানেই ভাল ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন ।
৮/ ডিজিটাল মার্কেটিং
ডিজিটাল মার্কেটিং বর্তমানে ট্র্যান্ডিং একটা টপিক। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মার্কেট একটা বিলিয়ন ডলারের মার্কেট । ছোট বড় প্রচুর কাজ আছে ডিজিটাল মার্কেটিং রিলেডেট। পেইড মার্কেটিং বা অরগানিক মার্কেটিং। আবার পেইড মার্কেটিং এর মধ্যে আপনি শুধু গুগুল এডস এও দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাও প্রচুর কাজ পাবেন মার্কেট প্লেস ।
৯/ এফ্যালিয়াট মার্কেটিং
আপনার কোন কন্টেন্ট দিয়ে যেমন ভিডিও বা আর্টিকেল এর মার্ধ্যমে কেউ যদি উৎসাহিত হয় উক্ত প্রোডাক্টটি কিনার জন্য এবং সেই প্রোডাক্টটি আপনার রেফারেল লিংক দিয়ে কিনা হয় তাহলে সেই বিক্রিত প্রোডাক্ট হতে আপনি একটা কমিশন পেতে পারেন। যেমন আপনি একটি বইয়ের রিভিউ লিখলেন আপনার বল্গ এবং সেটি পড়ে আপনার বল্গের পাঠকরা সেই বইটি কিনতে উৎসাহিত হয় এবং আপনার রেফারেল লিংক দিয়ে সেই বইটি কিনে রকমারি থেকে । তাতে আপনি রকমারি থেকে একটি কমিশন পেতে পারেন । তাদের থেকে বিক্রি বাড়ানোর জন্য।
১০/ ড্রপশিপিং
আমাদের দেশে আস্তে আস্তে জনপ্রিয় হচ্ছে ই-কমার্স, তারমধ্যে দারাজ মাল্টিভেন্ডর হিসেবে একচেটিয়া মার্কেট দখল করে আছে । আমাদের দেশে এমন অনেক দোকান বা ব্যবসা আছে যারা নিজেদের অফলাইন ব্যবসা করে আসলা সময় পাই না, সেখানে অনলাইনের কথা নাই বা ধরলাম। আপনি চাইলে সেইসব দোকান থেকে প্রডোক্টের ছবি তুলে দারাজে দিতে পারেন। এবং যখন আপনার কাছে অর্ডার আসবে সেই দোকান থেকে সেই প্রোডাক্ট সংগ্রহ করে গ্রাহকের কাছে পাঠিয়ে দিতে পারেন। যেটাকে সহজ ভাষায় আমাদের দেশের জন্য ড্রপশিপিং বলে ।
আমি এইখানে এমন দশটি কাজ তুলে ধরেছি যেগুলো শুরু করতে কোন টাকা বা ইনভেস্টের প্রয়োজন নেই আসলে । শুধু দরকার ধারাবাহিকতা, শিখার মানসিকতা, দক্ষতা অর্জন করা এবং সফলতা পাবার জন্য ক্ষুর্ধাত হওয়া। এই জিনিষ গুলো যদি ধারবাহিক ভাবে করতে পারেন তাহলে সফলতা আসবেই। মনে রাখবেন হুট করে কোন কিছুতে সফলতা পাওয়া সম্ভব না।