সৈয়দা আল হুরা : ইতিহাসের বিখ্যাত এক নারী জলদস্যু নেতা

‘জলদস্যু’ কথাটি শুনলে আমাদের চোখে ভেসে উঠে এক চোখে কালো পট্টি বাঁধা ভয়ংকর চেহারার একজন মানুষের ছবি। অনেকেই ভেবে বসেন যে অন্ধত্বের কারণে চোখে কালো পট্টি পড়তো জলদস্যুরা। কিন্তু না, তা নয়। দিনে ও রাতের আলো-অন্ধকার পরিবেশে দ্রুত মানিয়ে নিতে এক চোখে পট্টি ব্যবহার করতো তারা। প্রাচীনকাল থেকেই সমুদ্রপথে বেশিরভাগ বৈদেশিক বাণিজ্য হয়ে আসছে। ফলে সমুদ্রে দস্যুবৃত্তির ইতিহাস বেশ পুরোনো। ফলে জন্ম নিয়েছে অনেক জলদস্যু কিংবদন্তির মুখরোচক গল্প। কিছু কিছু গল্পের মূল নায়কের ঘটনা সত্য আর কতটা মিথ্যা প্রোপাগান্ডা তা পাঠকের পক্ষে নির্ণয় করা বেশ কঠিন। যেমন সমুদ্র ইতিহাসের বিখ্যাত একজন ব্যক্তি হচ্ছেন হাইরেদ্দীন বারবারোসা। লাল দাঁড়ির কারণে ইউরোপে যার পরিচয় ছিল কুখ্যাত জলদস্যু Redbeard নামে। আবার তুর্কি-আফ্রিকান অঞ্চলে তিনি ছিলেন দুর্ধর্ষ নৌ-সেনাপতি।  আজকের আর্টিকেলের মূল ব্যক্তি হচ্ছেন সৈয়দা আল হুরা নামের একজন নারী যিনি ছিলেন মরক্কোর ‘তেঁতুয়ান’ অঞ্চলের গভর্নর ও রানী। একই সঙ্গে তার আরেকটি পরিচয় ছিল। তিনি একই সঙ্গে একজন জলদস্যু নেতাও ছিলেন। এজন্য তাকে বলা হয় “one of the most important female figures of the Islamic West in the modern age” । চলুন জেনে নেয়া যাক এই ১৬ শতকের এই বিখ্যাত ব্যক্তি সম্পর্কে।

 

ছবিঃ জলদস্যু মানেই যেন এক চোখে পট্টি লাগানো ভয়ংকর চেহারার এক ব্যক্তি

সৈয়দা আল হুরা এর আসল নাম ছিল লায়লা আয়েশা বিনতে আলী ইবনে রশীদ আল-আলামি। তার পরিবারকে  বলা হতো ‘হাকিমাত তিত-ওয়ান’। তিনি ১৪৮৫ সালে তিনি স্পেনের আন্দালুসিয়া অঞ্চলের সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেন। ছোটবেলা থেকেই মুসলিম-খ্রিস্টান শাসকদের বিভিন্ন রাজনৈতিক পটপরিবর্তন দেখতে দেখতে তিনি বড় হন। April Fool এর ইতিহাস আপনারা সবার জানা।  ১৪৯২ সালে কৌশলী রানী ইসাবেলা ও রাজা ফার্ডিন্যান্ড এর মুসলিম বিদ্বেষী ষড়যন্ত্রে তৎকালীন ইউরোপের মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্য গ্রানাডার পতনের মধ্য দিয়ে স্পেনে মুসলিম শাসনের অবসান ঘটে। নির্যাতন থেকে বাঁচতে বহু শরণার্থী মানুষের ন্যায় সৈয়দা আল হুরার পরিবার মরক্কোর সাফসাওয়ান অঞ্চলে পালিয়ে আসে। কয়েক বছর আগেই তুর্কি হাতে রোমান বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের পতনের মাধ্যমে কনস্টান্টিনোপলে অটোমান শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে মরক্কো ছিল এক দিক থেকে অধিকতর নিরাপদ।

লায়লা আয়েশা ওরফে সৈয়দা আল হুরার বাবা ছিলেন শরীফ আব্দুস সালাম আল-আলামির বংশধর যার মূল ধারা হাসান ইবনে আলীর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।  অর্থাৎ বংশগত দিক দিয়ে সৈয়দা আল হুরা মুসলিমদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সম্পর্কিত! ছোটবেলা থেকেই তার পরিবার তার শিক্ষার জন্য চমৎকার বন্দোবস্ত করে। বিখ্যাত মরোক্কান স্কলার আব্দুল্লাহ আল-গাজওয়ানী ছিলেন তার শিক্ষক। তিনি আরবী, স্প্যানিশ, পর্তুগিজসহ একাধিক ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারতেন। শৈশবেই বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়া লায়লা  আয়েশার বিয়ে হয় ১৬ বছর বয়সে। পাত্র ছিলেন তেঁতুয়ানের গভর্নর ৩০ বছর বয়সী আলী আল-মান্দ্রি। আরেকটি সোর্স থেকে জানা যায় গভর্নরের ছেলে ইবনে আল-মান্দ্রির সাথে তার বিয়ে হয়েছিল। আমার কাছে দ্বিতীয় সোর্সটি সঠিক মনে হয়েছে। কেননা গভর্নর ছিলেন লায়লা আয়েশার বাবার বন্ধু। গ্রানাডার পতনের পর বন্ধুর দেশে আশ্রয় নিতে এসেছিলেন তার বাবা। যাই হোক, বিয়ের পর তার নাম হয়ে যায় সৈয়দা আল হুরা। আল হুরা শব্দের শাব্দিক অর্থ রানী। ইতিহাসের বইয়ে তার নামের অর্থ করা হয়েছে

‘noble lady who is free and independent’। তিনিই আধুনিক ইসলামী ইতিহাসের শেষ ব্যক্তি যাকে সরাসরি ‘রানী’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।

ছবিঃ রানী ইসাবেলা ও রাজা ফার্ডিন্যান্ড
ছবিঃ তৎকালীন ভুমধ্যসাগরের আশেপাশের অঞ্চলের ম্যাপ

জলদস্যু নাকি যোদ্ধা? :

আগেই বলেছি যে প্রোপাগান্ডাময় ভুল ইতিহাস কখনো কখনো নায়ককে ভিলেন বানিয়ে দেয়। আল হুরার ক্ষেত্রেও তেমনটি ঘটেছে। তার স্বামীর পরিবার ১৪৭২ সাল থেকেই তেঁতুয়ান অঞ্চলে পর্তুগিজ কলোনিয়াল আগ্রাসন প্রতিরোধে নেতৃত্ব দিচ্ছিলো। বিয়ের পর স্বামীর পাশাপাশি শাসনকার্যে সরাসরি অংশ নিতে শুরু করেন সৈয়দা আল হুরা। শিক্ষিত ও বুদ্ধিমতী এই নারীকে বৈদেশিক বাণিজ্য ও পররাষ্ট্রনীতি দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে আল-মান্দ্রি যে কোনো ভুল করেননি তা কয়েক বছরের মধ্যেই দেখা যায়। তৎকালীন সময়ের স্প্যানিশ-পর্তুগিজ ঐতিহাসিকগণ আল হুরাকে “partner in the diplomatic game” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

১৫১৫ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর তেঁতুয়ানের অভিজাত পরিবারগুলো তাকে ক্ষমতা গ্রহণের আমন্ত্রণ জানান। মুসলিম সংস্কৃতিতে সাধারণত নারীদের শীর্ষ ক্ষমতায় আরোহনের ক্ষেত্রে উৎসাহিত করা হয়না। কিন্তু স্পেনে রাজা ফার্ডিন্যান্ডের স্ত্রী রানী ইসাবেলার মতো শাসনকাজে দক্ষতা ও অন্যান্য অনেক গুণের সমন্বয় ঘটায় সৈয়দা আল হুরাকে সবাই নেতা হিসেবে মেনে নিতে আগ্রহী হয়। তাকে দেখা হচ্ছিলো চরমপন্থী খ্রিস্টান রানী ইসাবেলার মুসলিম কাউন্টারপার্ট হিসেবে। যোগ্যতার প্রমাণ দিতে বেশিদিন সময় নেননি আল হুরা। স্বামীর জীবদ্দশাতেই পর্তুগিজ কলোনিয়াল আগ্রাসন শুরু হয়েছিল। তার মারা যাওয়ার পর হামলার মাত্রা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। পর্তুগিজরা মরোক্কান বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া ছিল। তিনি আবার নতুন কৌশল করেন।

ছবিঃ কাল্পনিক ছবিতে জাহাজের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সৈয়দা আল হুরা

শত্রু যেহেতু সাগর পাড়ি দিয়ে আসে, তাই সাগরেই শত্রুকে পরাস্ত করতে হবে। আল হুরা এবার গঠন করেন ছোট কিন্তু সুসজ্জিত এক নৌবাহিনী। রানী থেকে হয়ে উঠেন জলদস্যু। যুদ্ধ কৌশলের অংশ হিসেবে শত্রুর রসদ ও বাণিজ্য জাহাজগুলোকে নিয়মিতভাবে আক্রমণ ও লুন্ঠন করার মাধ্যমে যদি শত্রুকে দুর্বল করা যায় তবে রানীর চেয়ে জলদস্যু উপাধিই উত্তম। দেশের এই আঞ্চলিক গভর্নরের একের পর এক বীরত্বের কথা শুনে প্রেমে পড়েন মরোক্কান সুলতান আহমেদ আল-ওয়াত্তাসি। তিনি সৈয়দা আল হুরাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিশেষ এক শর্তের বিনিময়ে রাজি হন। শর্ত হলো আল হুরা বিয়ের পর তৎকালীন রাজধানী ফেজ শহরের রাজপ্রাসাদে থাকবেন না। বরং তেঁতুয়ানেই থেকে গভর্নরের দায়িত্ব পালন করবেন। সেই শর্ত মেনে ১৫৪১ সালে তাদের বিয়ে হয়। এটি মরক্কোসহ মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম শাসনামলের একমাত্র ঘটনা যেখানে রাজার স্ত্রী রাজধানীর বাইরে বসবাস করে এবং শাসনকার্য পরিচালনা করে। এমনকি বিয়ের জন্য সুলতান আহমেদ আল-ওয়াত্তাসিকে ফেজ থেকে তেঁতুয়ানে আসতে বাধ্য করেছিলেন সৈয়দা আল হুরা। ভাবুন একবার, নিজ দেশ ছেড়ে পরভূমে এসে সেই রাজ্যের প্রতি কতটা নিবেদিত প্রাণ হলে বিয়ের জন্যও প্রিয় শহরকে সীমিত সময়ের জন্য ত্যাগ করেননি এই মহীয়সী নারী!

তার কূটনৈতিক দক্ষতা ছিল অসামান্য। দ্বিতীয় বিয়ের পর ভাই ইব্রাহিমকে স্বামীর উজির নিযুক্ত করেন। তিনি সুলতানের সাথে বোনের মিত্রতার উদাহরণ দিয়ে বিভিন্ন মরোক্কান গোত্র ও আঞ্চলিক সরকারগুলোকে স্পেন ও পর্তুগালের বিরুদ্ধে সুলতানের নেতৃত্বে একতাবদ্ধ করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মরক্কোর বিভিন্ন স্থান থেকে সাহায্য ফলে আল হুরার নৌবাহিনী বেশ দ্রুত বড় হতে থাকে। তিনি এবার স্প্যানিশ জাহাজেও হামলা শুরু করেন। গ্রানাডার পতন, ব্যাপক মুসলিম নির্যাতন ও মাতৃভূমির স্বাধীনতার হরণ তাকে এই বিপদজনক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে।

ছবিঃ একজন নারী হয়ে জলদস্যুদের নেতা হওয়া ইতিহাসে বিরল

তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবার স্প্যানিশরা সাথে পর্তুগিজদের সাথে একজোট হবে আশঙ্কা করে তিনি এবার বিশেষ এক বড় ভাইয়ের সাথে জোট বাঁধেন। আর সেই বড় ভাই আর কেউ নয়, তিনি হলেন দুর্ধর্ষ অটোমান এডমিরাল হাইরেদ্দীন বারবারোসা! তিনিও প্রস্তাব পেয়ে আল হুরার সাথে মিত্রতা করতে রাজি হয়ে যান। ফলে অটোমান সাম্রাজ্যের সাথে তেঁতুয়ানের তথা মরক্কোর সুলতানের মৈত্রী স্থাপিত হয়। অটোমান এডমিরালের কৃতিত্ব সম্পর্কে পাঠকের না জানা থাকলে এই সিদ্ধান্তের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারবেন না। বারবারোসার ভয়ে তখন অর্ধেক ইউরোপ কাঁপছিল। তিনি ছিলেন ভূমধ্যসাগরে ইউরোপীয় খ্রিস্টান দেশগুলোর জাহাজের জন্য মূর্তিমান আতঙ্ক। এজন্য তাকে আজকের ইতিহাসে আমরা কুখ্যাত জলদস্যু হিসেবে জানি। কিন্তু তার জলদস্যু হয়ে উঠার গল্প ছিল আল হুরার মতোই রক্ষণাত্মক কৌশল। তিনিসহ তার চার ভাই প্রথম জীবনে বণিক ছিলেন। ক্রুসেড করতে অর্থ জোগানোর জন্য খ্রিস্টান এলিট নাইট টেম্পলার যোদ্ধারা তার জাহাজ আক্রমণ করে তাকে বন্দি করে। তাকে ছেড়ে দিলেও দুই বছর দাস হিসেবে বন্দি থাকে তার ভাই। পরে তিনি টেম্পলারদের হামলায় সব হারিয়ে ক্ষিপ্ত বণিকদের নিয়ে জলদস্যু বাহিনী গঠন করে ইউরোপীয় বাণিজ্য জাহাজ লুট করতে করতে তাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রায় ধসিয়ে দেয়। তাকে শায়েস্তা করতে একাধিক যুদ্ধ হয়। এরই মধ্যে অটোমান সুলতানরা বারবারোসার ন্যায় জলদস্যু দলগুলোকে ভাড়াটে সৈনিক হিসেবে ব্যবহার করে নিজেদের নৌশক্তির অক্ষমতা মেরামত করতে শুরু করে। ছোট্ট একটি উদাহরণ দেই। কয়েক বছর আগেই ১৫৩৮ সালে ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পোপ তৃতীয় পল এডমিরাল বারবারোসার বিরুদ্ধে একটি নৌ ক্রুসেডের আয়োজন করেছিলেন। সেই যুদ্ধে স্পেন, জেনোয়া, ভেনিস প্রজাতন্ত্র এবং মাল্টার এলিট নাইট টেম্পলার যোদ্ধাদের সমন্বয়ে ১৫৭টি যুদ্ধজাহাজ নিয়ে গঠিত ‘পবিত্র সংঘ’ নামের একটি যৌথ নৌবাহিনী গঠন করা হয়েছিল।

ছবিঃ এডমিরাল বারবারোসা
ছবিঃ এডমিরাল বারবারোসার জীবনী নিয়ে সম্প্রতি নির্মিত Barbaros নামের তুর্কি টিভি সিরিজটি ইউরোপ ও ভারতীয় উপমহাদেশে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

২৮ সেপ্টেম্বর ১৫৩৮ সালে প্রেভায় সংঘটিত এই নৌ যুদ্ধে বারবারোসার বাহিনীর কাছে পোপের যৌথ বাহিনী শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। এর ফলে ভূমধ্যসাগরের পূর্বপ্রান্তে বারবারোসার একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। তার সাথে সৈয়দা আল হুরা যোগ দেয়ার ভূমধ্যসাগরের পশ্চিম প্রান্তেও মুসলিম আধিপত্য বিস্তার সম্ভব হয়।

ফলে ভূমধ্যসাগরে ক্রুসেডারদের চলাচল করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। স্পেন, পর্তুগাল, ইতালির সাথে বাণিজ্য করা বণিকদের আল হুরার নিয়ন্ত্রণে থাকা বন্দরগুলো কর দিয়ে ব্যবহার করতে হতো। জলদস্যুতার মাধ্যমে আটক বাণিজ্য জাহাজগুলোকে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিতেন। বন্দি নাবিকদের

সাথে ভালো আচরণের কারণে তিনি তাদের কাছে ‘মহান রানী’ হিসেবে প্রশংসিত ছিলেন। এই প্রশংসা নাবিকদের মুখে মুখে ইউরোপের দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। “The Forgotten Queens of Islam” বইয়ে মরোক্কান ফেমিনিস্ট লেখিকা Fatima Mernissi ১৫৪০ সালের স্প্যানিশ হিস্টোরিক্যাল ডকুমেন্ট উপস্থাপন করেন যেখানে জিব্রাল্টার প্রণালীতে গ্রেফতার হওয়া একটি স্প্যানিশ জাহাজের বন্দি নাবিকদের ছেড়ে দেয়া নিয়ে একটি সফল চুক্তিপত্রে সৈয়দা আল হুরা এবং স্প্যানিশ দূতের স্বাক্ষর ছিল।

ছবিঃ শিল্পীর তুলিতে সৈয়দা আল হুরা

অবশেষে ৩০ বছর একটানা শাসন করার পর তার মেয়ের স্বামী মুহাম্মদ আল হাসান আল-মান্দ্রির কাছে ক্ষমতাচ্যুত হন সৈয়দা আল হুরা। ইয়েমেন টাইমস পত্রিকা এঘটনা সম্পর্কে তাদের কলামে লিখেছে

“she was stripped of her property and power” অর্থাৎ তার ক্ষমতা ও সম্পত্তি কেড়ে নেয়া হয়েছিল। তার দ্বিতীয় স্বামী সুলতান আহমেদ আল-ওয়াত্তাসি ১৫৪৯ সালেই মারা গিয়েছিলেন। সৈয়দা আল হুরা ১৪ জুলাই, ১৫৬১ সালে মৃত্যুর আগের ২০ বছর মরক্কোর সেই সাফসাওয়ান অঞ্চলে বসবাস করেছিলেন যেখানে ছোটবেলায় তার পরিবার পালিয়ে এসেছিল। জীবদ্দশায় তিনি স্পেনের আন্দালুসিয়ায় আবার মুসলিম শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও জন্মভূমিতে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন যা কখনো পূরণ হয় নি। আর ইতিহাসও এই সংগ্রামী নারীকে যথাযত মূল্যায়ন করেনি।

Add a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।