১৫ টি ছোট খাটো ব্যবসার আইডিয়া

মোবাইল এন্ড কম্পিউটার পার্টস

মোবাইল এবং কম্পিউটার দুটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস। আপনার যদি এই ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস সম্পর্কে খুব ভাল বুঝেন। এবং পর্যাপ্ত পরিমাণের আইডিয়া থাকে তাহলে মোবাইল এন্ড কম্পিউটার পার্টস এর বিজনেস আপনার জন্য একটি উত্তম পন্থা। এটি চলমান ব্যবসা। তবে এই ব্যবসায় সর্বপ্রথম আপনার একটি ব্যবসা পরিকল্পনা করতে হবে। এবং এবং প্রতিটি ডিভাইসের সেবা প্রদান করা, পণ্যের গুনগত মান ঠিক রাখা , আপনার কাছে থাকা ডিভাইস কোন ব্র্যান্ড এর কোন মডেল এর বৈশিষ্ট্য কেমন তা সম্পর্কে ধারণা রাখা এবং কাস্টমার কে অবগত করতে সক্ষম হওয়া ইত্যাদি। ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস যেহেতু বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস তাই বিশ্বস্ত প্রযুক্তির প্রতিষ্টান গড়ে তুলে আপনি আপনার ব্যবসাকে দাড় করাতে সক্ষম হবেন।

হ্যান্ডক্র্যাফট

হ্যান্ডক্রাফট জিনিসের ব্যবসা একটি আকর্ষণীয় আইডিয়া। এটি একটি ক্রিয়েটিভ বিজনেস। হ্যান্ডমেইড জিনিস পছন্দ করেনা এমন মানুষ খুব কমই আছে। যেমন হ্যান্ডপ্রিন্ট যেকোনো কাপড়,হ্যান্ডমেইড শোপিস, ওয়ালমেট ইত্যাদি আরও বিভিন্ন কিছু বিজনেস বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় এবং এসব জিনিসের ডিমান্ড ও এখন রয়েছে অনেক। তবে এই বিজনেস শুরু করার আগে আপনার কিছু দিক লক্ষ্য রাখতে হবে তা হল সঠিক ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, মার্কেটিং পরিকল্পনা এবং চাহিদা অনুযায়ী পণ্য তৈরি ও পণ্যের গুণগত মান ইত্যাদি।

ফুলের চাষ

ফুলের চাষ একটি চমৎকার ও উপলব্ধিপূর্ণ ব্যবসা হতে পারে।এটি একটি সুন্দর ও সহজ প্রক্রিয়া যা মূলত প্রাকৃতিক উপাদান করা যায়। ফুল এমন একটা জিনিস যা সবসময় যেকোনো কাজে প্রয়োজন হয়। যেমন কোন ডেকোরেশনের কাজে, কাউকে উপহার স্বরূপ ইত্যাদি আর বিভিন্ন কাজে ব্যবহিত হয়ে থাকে। ফুল ব্যবসা খুবই লাভজনক তবে এই ব্যবসা শুরু করার আগে আপনার কিছু পদক্ষেপ মানতে হবে যেমন ভূমি ও প্রাকৃতিক পরিবেশ বিবেচনা, প্রযুক্তি ব্যবহার, পরিচ্ছন্নতা,প্রচারণা সংরক্ষণ ইত্যাদি সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা নেওয়া।

হোমমেইড বিভিন্ন খাবারের আইটেম

বর্তমানে কমবেশী মানুষই রেডিমেইড জিনিসের উপর নির্ভরশীল।
তাছাড়া পরিবারে যদি দুজনে কর্মব্যস্ত থাকে তাহলে রেডিমেইড খাবারের জুড়ি নেই। আর বিশেষ করে স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা ভেবে মানুষ দোকানের খাবারের চেয়েও হোমমেইড খাবারের প্রতি আগ্রহ বাড়াচ্ছে। এই বিজনেস অনলাইন অফলাইন সব ক্ষেত্রে খুব ভালো চাহিদা রয়েছে। সব ধরনের খাবার যেমন ফ্রোজেন সমুসা, সিঙ্গারা, সিজনাল বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী নাস্তা, কোন অনুস্টান কিংবা দাওয়াতের জন্য হোমমেইড খাবার চাহিদার জুড়ি নেই।
খাবার এবং নাস্তার পাশাপাশি হোম মেইড আচার এর ও অনেক অনেক চাহিদা রয়েছে। আচারের এই চাহিদা দেশে এবং দুই ক্ষেত্রে পাওয়া যায়। আপনি যদি বিভিন্ন আচার তৈরি তে পারদর্শী হন তাহলে বাকি গুলো ছাড়াও আপনি খুব সহজেই আচারের গড়ে তুলতে পারবেন এবং অনলাইনেও এটি খুব সহজে এগিয়ে নিতে পারবেন।

জুস বার

খুব অল্প পুঁজিতে এবং ছোট স্পেসে চাইলে একটা জুস বার দেওয়া যায়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টান কিংবা অফিস এরিয়া তে ছোট একটি দোকান নিয়ে কিছু বসার জায়গা করে খুব সুন্দর ভাবে এটি করা যেতে পারে। যদি সুযোগ হয়ে থাকে তাহলে পাশাপাশি চা কফি একসাথে রাখা যেতে পারে। সবার পছন্দমতো দেওয়া ও সম্ভব এবং মোটামুটি একটি আয়ও ।

 

বাচ্চাদের আইটেম

একটি বাচ্ছা জন্ম নেয়া থেকে শুরু করে আস্তে আস্তে বড় হওয়া অবধি অনেক প্রয়োজনীয় জিনিসের দরকার পরে। আর প্রতিটি বাচ্ছার জন্য প্রত্যেক মা বাবাই চায় খুব কোয়ালিটি সম্পন্ন জিনিস। বাচ্ছাদের স্বাস্থ্য সচেতন থেকে শুরু করে খাবার দাবার খেলনা পাতি সারা বছর কিনতে ব্যস্ত পুরো পরিবার। তাই এটি খুবই লাভজনক ব্যবসা। আপনি খুব ছোট একটি দোকান নিয়ে এই বিজনেস করতে পারেন বাচ্ছাদের যাবতীয় জিনিস সেরেলাক, ডায়পার , মোজো ইত্যাদি সেল করতে পারেন অথবা খুব সহজে অনলাইনেও এই বিজনেস করতে পারেন।

গ্যারেজ বা গাড়ি সার্ভিসিং

আপনার যদি মুটামুটি বা অল্প পরিসরে খোলা জায়গা থাকে তবে এই বিজনেস আপনি খুব সহজে শুরু করতে পারেন। আপনি সেই জায়গা কে অরগানাইজ করে বিভিন্ন সার্ভিস রাখতে পারেন যেমন গাড়ির মেইন্টেনেন্স, সার্ভিস, মোটর রিপেয়ার ইত্যাদি। মোটর বাইক ,কার ওয়াশ করার ব্যবস্থা। সর্বশেষ গাড়ি রাখার জন্য ব্যবস্থা রাখা ইত্যাদি। এটি সবসময় এবং পুরাতন বিজনেস হলেও অনেক লাভজনক।

ওয়ান টাইম প্লেট ও গ্লাস তৈরি

এই ব্যবসার খুব জনপ্রিয় এবং বাজার চাহিদাও বেশ ভালো। এই ব্যবসা শুরু করার আগে আপনার সর্ব প্রথম পদক্ষেপ হল জায়গা নির্ধারণ করা। এবং কাঁচামাল সংগ্রহের জন্য সহজ পদ্ধতি বের করা। আপনি খুব সহজে কম সময়ে মেশিনের মাধ্যমে অধিক জিনিস উৎপাদন করতে পারবেন। তাই পর্যাপ্ত মূলধন দিয়ে এই ব্যবসা শুরু করতে পারলে মাসে অন্তত ৫-৬ লক্ষ টাকাও আয় করা সম্ভব।

ট্রাভেল এন্ড ট্যুরিজম ব্যবসা

ভ্রমন প্রিয় মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে ভ্রমণ এবং পর্যটন ব্যবসা। এই ব্যবসায়িক খাতে মূলত কাজ হল পর্যটকদের হোটেল, রেস্তোরাঁ,ভ্রমণী পরিবহণ, ভ্রমণী গাইড, একক দিনের ভ্রমণ ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান পর্যবেক্ষণ করানো ইত্যাদি বিভিন্ন সেবা প্রদান করা। পর্যটকরা কোন স্থানে যাবে কতদিন থাকবে কি কি দেখবে উপভোগ করবে তার একটি প্রপারলি প্যাকেজ ঠিক করে দেওয়া। এবং সেই নির্দিষ্ট কাজের জন্য অর্থ গ্রহন করা। বর্তমানে বিশেষ জন্য এটি একটি পছন্দনীয় ব্যবসা হয়ে উঠেছে।

ফুড কার্ট

আপনি খুব সীমিত বাজেটে একটি ফুড ভ্যান চালু করতে পারেন।এই ফুড ভ্যান চালু করতে আপনার প্রয়োজন হবে একটি সিলিন্ডার আর ব্যাটারি বিদ্যুৎ এর সংযোগ। এর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল ফুড ভ্যানটির জায়গা নির্ধারণ করা।
বর্তমানে অফিস ক্যাটাগরির মানুষ থেকে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় সকল স্তরের মানুষের ফাস্টফুড জাতীয় খাবার যেমন বার্গার, মোমও ,স্যান্ডউইচ, পাস্তা ইত্যাদি পছন্দের তালিকায়। তাই পছন্দনীয় খাবারের এই ম্যানু নিয়ে আপনি কোন স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কমার্শিয়াল এরিয়ায় স্থাপন করে আপনি আয় করতে পারেন। তবে আপনার কোয়ালিটি এবং হাইজিন এর ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। এবং মূল্য নির্ধারণেও যতেষ্ট সচেতন থাকতে হবে।

সবজি রপ্তানি

নিজ বাগানে সবজি উৎপাদন করে তা রপ্তানি করে আয় করা একটি অন্যতম ব্যবসায়িক মাধ্যম। সবজি ব্যবসা সবসময়ের জন্য। এটি মানুষের নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় আহার্য । তাই অল্প মূলধনে এই ব্যবসার কোন কমতি নেই। বিশেষ করে সিজনাল সবজির বাগান করে। শীতকাল বাংলাদেশের জন্য একটি সবজির সিজন এই সময়ে সব ধরনের সবজির চাহিদা থাকে অধিক পরিমানে। সঠিক পরিচর্চার মাধ্যমে অল্প কিছু জায়গাতে সিজনাল সবজি চাষ করে বিভিন্ন জায়গাই রপ্তানি করে লাভবান হতে পারবেন।

মুরগীর খামার

খামার খুবই পুরাতন ব্যবসা তবে অনেক লাভজনক। লাভজনক বলে আজ পর্যন্ত ঠিকে আছে। এই ব্যবসা একবার করে উঠাতে পারলে সবসময়ের জন্য নিসন্দেহে একটি কর্মসংস্থান। তবে খামার যতটা ততটা পারিশ্রামিক কাজও। খামার ব্যবসা শুরু করার আগে একটি খামারে কিছুদিন থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করা টাই সবচেয়ে উত্তম কাজ। তার পরবর্তী কাজ মুরগি ফার্ম তৈরি করতে পদক্ষেপ নেওয়া এবং সে অনুযায় কাজ করা।

হ্যান্ডমেইড জুয়েলারি ব্যবসা

হ্যান্ডমেইড জুয়েলারী বিজনেস একটি আকর্ষণীয় এবং ক্রিয়েটিভ বিজনেস। এই বিজনেস মূলত পরিশ্রম, উপস্থিত বুদ্ধির সংমিশ্রন। জুয়েলারি বিভিন্ন কিছু দিয়ে বানানো যায় যেমন ক্লে, সূতা,পাট ইত্যাদি। তবে এই জুয়েলারি বিজনেস করার জন্য আপনার প্রথমে এই বিষয়ে শিক্ষা এবং দক্ষতা থাকতে হবে। মার্কেটিং ডিজাইনিং এর ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে। তবে আপনার প্রতিষ্ঠান পরিচিতি এবং সাড়া জাগাতে পারলে মাস শেষে ভালো আয় করতে পারবেন নিঃসন্দেহে।

গিফট আইটেম সেল

বর্তমানে খুব ট্র্যান্ডিং এবং জনপ্রিয় বিজনেস হল গিফট আইটেমের বিজনেস। এই বিজনেস আপনি খুব ছোট দোকান নিয়ে করতে পারেন। হাতের কাছে কিংবা বাজেটে আপনি এমন দোকান না পেয়ে থাকলে আপনি অনলাইনে এই বিজনেস শুরু করতে পারেন। এই গিফট আইটেমে আপনি বিভিন্ন শো-পিস উইশিং কার্ড, অথবা কাপল কম্বো রাখতে পারেন। কিংবা অনেক গুলা জিনিস মিলিয়ে একটি কম্বো বানাতে পারেন যেমন শাড়ি, চুড়ি ফুল টিপ অপরদিকে পাঞ্জাবী ঘড়ি পারফিউম ইত্যাদি করে সেল করতে পারেন। এই বিজনেসে আপনার কাঁচামাল আপনি যেই জেলাতে থাকেন সেই জেলার পাইকারি বাজারের থেকে আপনি সংগ্রহ করতে পারেন। যেখানে যেমন সুবিধা মত। এই বিজনেস খুবই লাভজনক। তবে খেয়াল রাখতে হবে জিনিসের কোয়ালিটি যেন সবসময় অথেনটিক থাকে। তবেই আপনার বিজনেস খুব ভাল আয় করতে পারবেন।

বেবী খেলনা সেল

বাচ্চাদের খেলনার ব্যবসা সবসময়ের জন্য স্থায়ী ব্যবসা। বলা যায় অল্প মূলধনে অধিক লাভবান ব্যবসা এটি। কারণ প্রতিনিয়ত বাচ্চাদের খেলনার চাহিদা রয়েছে সেই সাথে আসছে নতুন নতুন ধরণের ভিন্ন ভিন্ন খেলনা। পাইকারী মূল্যে অল্প মূল্যে পাইকারী বাজার থেকে আপনি অনেক খেলনা এনে সেল করতে পারবেন। তবে খেয়াল রাখা প্রয়োজন আপনার এলাকায় আপনার দোকানে বাচ্চাদের কেমন খেলনার চাহিদা রয়েছে।

সর্বশেষ বলা যায়, আমরা যারা বিজনেস করবো করবো ভেবেও বিভিন্ন কারনে পিছিয়ে পরি বা কি নিয়ে শুরু করবো তা ভাবতে থাকি অথবা কারো কারো মূল্ধন থেকেও আইডিয়া থাকেনা তারা এসব আর্টিকেল সমূহ থেকে আইডিয়া নিয়েও বিজনেস আগাতে পারেন। উদ্যোগ নিতে পারেন।

Add a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।